বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের যুগবিভাগ
1. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস কে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- প্রাচীন যুগ, মধ্য যুগ, আধুনিক যুগ।
2. ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লহর মতে প্রাচীন যুগ হল ৬৫০-১২০০ খৃষ্টাব্দ, ডঃ সুনীতি কুমার এর মতে ৯৫০-১২০০ খৃষ্টাব্দ
3. মধ্যযুগ হল ১২০১- ১৮০০ খৃস্টাব্দ
4. আধুনিক যুগ হল ১৮০১- বর্তমান
5. দীনেশ চন্দ্র সেন এর বঙ্গ ভাষা ও সাহিত্য গ্রন্থে বাংলা সাহিত্যের যুগ কে পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন। সেগুলো
ক) হিন্দু বৌদ্ধ যুগ
খ) গৌড়ীয় যুগ বা চৈতন্য পূর্ব যুগ
গ) চৈতন্য সাহিত্য বা নবদ্বীপের যুগ
ঘ) সংস্কার যুগ
ঙ) কৃষ্ণ চন্দ্রের যুগ
6. প্রাচীন যুগের একমাত্র নিদর্শ হচ্ছে চর্যাপদ
7. মধ্যযুগ কে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- ক) প্রাক চৈতন্য যুগ- ১২০১-১৫০০
খ) চৈতন্য যুগ- ১৫০১-১৬০০
গ) চৈতন্য পরবর্তী যুগ – ১৬০১-১৮০০ ক্রিস্তাব্দ
8. মধ্য যুগের কাব্যের প্রধান ধারা চারটি- ক) মঙ্গল কাব্য, খ) বৈষ্ণব পদাবলী, গ) রোমান্স ধর্মী প্রণয় উপাখ্যান
ঘ) অনুবাদ সাহিত্য
9. প্রাচীন যুগের সাহিত্যের বৈশিষ্ট হল- ব্যক্তি কেন্দ্রিকতা ও ধর্ম নির্ভরতা
10. মধ্যযুগের সাহিত্যের বৈশিষ্ট- ধর্ম নির্ভরতা
11. আধুনিক যুগের সাহিত্যের বৈশিষ্ট হল- আত্নচেতনা ও জাতীয়তা বোধ ও মানবতার জয়জয়কার
12. অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে চর্যার পদ গুলো রচিত হয়
13. চর্যাপদ মূলত বৌদ্ধ তান্ত্রিক দের সাধন সঙ্গীত। তবে এর মাধ্যমে সমকালীন সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বিবরণ পাওয়া যায়
14. চর্যাপদের মোট কবি ছিলেন ২৩ জন, মতান্তরে ২৪ জন। মোট পদের সংখ্যা ছিল ৫১ টি
15. ১৮৮২ সালে রাজেন্দ্র লাল মিত্র প্রকাশিত গ্রন্থে প্রথম বৌদ্ধ তান্ত্রিকদের সাহিত্যের ব্যাপারে জানা যায়। এর আগে এদের ব্যাপারে তেমন কিছু জানা যায়নি
16. হরপ্রসাদ শান্ত্রী ১৮৯৭, ১৮৯৮, ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শান্ত্রী নেপালে গিয়েছিলেন
17. হরপ্রসাদ শান্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের পুঁথিশালা থেকে পদ আবিষ্কার করেন।
18. ১৯০১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে তাঁর সম্পাদনায় ”হাজার বছরের পুরান বাংলা ভাষায় বৌদ্ধ গান এবং দোহা” নামে তা প্রকাশ করেন
19. চর্যাপদের ভাষা কে সান্ধ্য ভাষা বলা হয়ে থাকে কারণ এটি বেশ দুর্বোধ্য ছিল
20. নেপাল থেকে প্রাপ্ত পুঁথিতে চর্যাপদের নাম ছিল চর্যাচর্যবিনিশ্চয়
21. চর্যাপদ- সাহিত্যের আদি নিদর্শন
22. চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম পদ সংকলন
23. ইহা বাংলা সাহিত্যের প্রথম গ্রন্থ ও সাহিত্য
24. গৌতম বুদ্ধের অনুসারী সহজিয়া পন্থিরা রচনা করেন বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন তম নিদর্শন চর্যাপদ
25. চর্যাপদ একটি গানের সংকলন। চর্যা শব্দের অর্থ হল আচরণ
26. চর্যাপদকে বলা হয় – সাধন সংগীত
27. চর্যাপদ রচনা শুরু হয় পাল রাজ বংশের আমলে
28. চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্ম মতের উল্লেখ রয়েছে
29. সহজিয়া মতের প্রভর্তক হলেন মীননাথ
30. চর্যাপদের যে নাম গুলো পাওয়া যায়- চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, চর্যাগীতি কোষ, চর্যাগীতি, চর্যাপদ
31. ডাক ও খনার বচন বাংলা সাহিত্যের আদিম যুগের সৃষ্টি
32. চর্যাচর্যবিনিশ্চয়- হরপ্রসাদ শান্ত্রীর আবিষ্কৃত পুঁথির নাম এটি। এর অর্থ হল-কোনটি আচরণীয়, আর কোনটি নয়
33. আধুনিক গবেষকগণ মনে করেন মূল পুঁথির নাম চর্যাগীতি কোষ, এবং তার সংস্কৃতি নাম- চর্যাচর্যবিনিশ্চয়
34. চর্যাপদের সংস্কৃতি টিকাকার হলেন মুনি দত্ত, যার নাম আশ্চর্যচর্যাচয়
35. মুনি দত্তের তিব্বতি অনুবাদ করেন কীর্তি চন্দ্র। নাম হল- চর্যা গীতি কোষ বৃত্তি
36. চর্যাপদের ভাষা কে আলো আঁধারি বা সান্ধ্য ভাষা বলে
37. চর্যাপদের ভাষাকে বাংলায় প্রতিপন্ন করেন -ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় ১৯২৬ সালে তাঁর Origin and Development of Bengali Language গ্রন্থে
38. চর্যাপদের ধর্মমত নিয়ে আলোচনা করেন ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯২৭ সালে তাঁর Buddhist Mystuc Songs গ্রন্থে
39. ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের ভাষা হল বঙ্গ কামরূপী
40. ডঃ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে পশ্চিম বঙ্গের উপভাষা
41. চর্যাপদের ছন্দ হল মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
42. কৃষি কাজের উপযোগী সাহিত্য হল ডাক ও খনার বচন
43. খনার বচন কৃষি কাজ নিয়ে উপদেশমূলক কথা বলে
44. খনার বচনের মূলভাব হল শুদ্ধ জীবনের রীতি
45. প্রাচীন যুগের সাহিত্যের উপকরণ- রূপকথা
46. রূপ কথা হল শিশুতোষ কল্পকাহিনী ও লোকসাহিত্যের শাখা
47. লাল বিহারী দে হলেন প্রাচীন সাহিত্যের প্রথম সংগ্রাহক এবং ইংরেজী অনুবাদক
48. তাঁর অনুবাদ কৃত গ্রন্থের নাম Folk Tales of Jengle, 1875
49. তাঁর উত্তরসুরী দক্ষিনারঞ্জন মিত্র মজুমদার ঠাকুরমার ঝুলি প্রকাশ করেন
50. চর্যাপদ রচনা কাল ও অবস্থান-১৯১৬ সালে ১৩২৩ বঙ্গাব্দে, কোলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, প্রকাশক- হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
51. হরপ্রসাদ শান্ত্রী সম্পাদিত বই – হাজার বছরের পুরানো বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধ গান ও দোহা নামে গ্রন্থটির মধ্যে চর্যাপদ প্রকাশিত হয়
52. প্রাচীন যুগে চর্যাপদের সাথে অন্য যে পুঁথি পাওয়া যায়- ডাকার্নব সরহপাদের দোহা, আর কৃষ্ণ পাদের দোহা
53. চর্যাপদের কথা সর্ব প্রথম বিভিধার্থ পত্রিকায় বলা হয়
54. ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদ রচিত হয় ৭ম থেকে দ্বাদশ শতকে
55. সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে ১০ম থেকে দ্বাদশ শতকে চর্যাপদ রচিত
56. চর্যাপদ বর্তমানে কোলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে সংরক্ষিত
57. ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর মতে চর্যার পদ বা গান সংখ্যা হল ৫০ টি
58. চর্যার পদ বা গান পাওয়া যায় সাড়ে ছেচল্লিশটি
59. চর্যাপদের মধে রাগের সংখ্যা ১৮ টি
60. চর্যার প্রতিটি পদ ১০ লাইনে লেখা
61. চর্যার ২১ নম্বর পদটি ১৮ লাইনে লেখা
62. চর্যার ৪৩ তম পদটি ১২ লাইনে লেখা
63. চর্যার যে পদ্গুলি পাওয়া যায়নি- ২৪,২৫,৪৮ নম্বর পদ
64. ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর মতে চর্যাপদের রচয়িতা মোট ২৩ জন
65. ডঃ সুকুমার সেনের মতে চর্যার রচয়িতা ২৪ জন
66. চর্যাপদের আদি কবি হলেন লুইপা
67. চর্যাপদের সর্বাধিক পদের রচয়িতা হলেন কাহ্নপা
68. চর্যাপদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদের রচয়িতা হলেন ভুসুকুপা
69. চর্যাপদের শেষ পদের রচয়িতা- সরহপা
70. চর্যাপদের একমাত্র মহিলা কবি কুক্কুরিপা
71. চর্যাপদের কোন কবি নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দেন- ভুসুকুপা
72. চর্যার কবিগণ সিদ্ধাচার্য নামে পরিচিত
73. চর্যাপদের বাঙালি কবি হলেন তিনজন- লুইপা, শবরপা, ভুসুকুপা
কবিদের পরিচয়
74. আম্রদেব – রাজা ছিলেন
75. কম্বলাম্বর- ভিক্ষু ও সিদ্ধা
76. ঢেন্টন পা – তাঁতি ও সিদ্ধা
77. ডোম্বী পা – ত্রিপুরার রাজা
78. দারিক পা – সালিপ পুত্রের রাজা ছিলেন
79. ধর্ম পা – ভিক্ষু ও সিদ্ধা
80. ভদ্র পা – চিত্রকর